২০২১ সালের মধ্যে আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি

২০২১ সালের মধ্যে আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার প্রতিশ্রুতি দ্রব্যমূল্য হ্রাস ও মহামন্দা রোধ, দুনীতি দমন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি, দারিদ্র্য বিমোচন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগ দিন বদলের সনদ নামে ২৩ দফা নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে৷ ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস কঠোর হস্তে দমন করার অঙ্গিকার করা হয়েছে৷ ২০২১ সালকে টার্গেট করে আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হয়েছে৷ এ প্রতিশ্রুতিগুলোর মধ্যে রয়েছে ২০১৩ সালে অর্থাৎ ৪ বছরের মধ্যে দেশকে পুনরায় খাদ্যে আত্মনির্ভরশীল করা, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে সবার জন্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা, বেকারত্বের হার ৪০ থেকে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা, আগামী ৫ বছরে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে ৪৫ শতাংশ থেকে ২৫-এ নামিয়ে আনা, ৱাতক পর্যন্ত শিক্ষাকে সবার জন্য অবৈতনিক করা, দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরও শক্তিশালী করা এবং দারিদ্র্য বিমোচনে কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়নকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া৷

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভোট ও ভাতের অধিকার দারিদ্র্য বিমোচনের হাতিয়ার-এই শ্লোগানের ভিত্তিতে রচিত এ ইশতেহার ভিশন-২০২১ নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণী যারা প্রথম ভোটার হয়েছেন তাদেরকে উৎসর্গ করেন৷ ইশতেহারে গভীর সংকট থেকে দেশকে উদ্ধার করে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলে উন্নয়ন, গণতন্ত্র, শান্তি ও প্রগতির পথে এগিয়ে নেয়ার প্রতিজ্ঞা ব্যক্ত করা হয়৷ চাল, ডাল, তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা, দ্রব্য মূল্য সন্ত্রাসী সিণ্ডিকেট ভেঙে দেয়া, বিশ্ব-মন্দা মোকাবিলায় টাস্ক ফোর্স গঠন এবং তথ্য বিশ্লেষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা, দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করার কথা ইশতেহারে বলা হয়েছে৷জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ ও আঞ্চলিক বহুমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করার কথা বলা হয়েছে৷ আরও বলা হয়েছে, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা হবে ২০ হাজার মেগাওয়াট৷ ৩ বছর মেয়াদি ক্র্যাস প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন করে ২০১৩ সালের মধ্যে ৭ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০১৫ সালের মধ্যে ৮ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে৷ বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের রায় কার্যকর করাসহ বিচার বিভাগের প্রকৃত স্বাধীনতা, সুশাসন প্রতিষ্ঠায় মানবাধিকার, আইনের শাসন ও নাগরিক মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে৷

শিক্ষা, বিজ্ঞান, তথ্য প্রযুক্তি খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় বরাদ্দ নিশ্চিত করা, নতুন শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করে শিক্ষা-ব্যবস্থা আধুনিক, ২০১৩ সালের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য সেবা এবং ২০১৫ সালের মধ্যে সবার জন্য আবাসন নিশ্চিত করা হবে৷ ঢাকায় আরেকটি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, পদ্মা সেতু নির্মাণসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে সড়ক, রেল ও নৌ পথের আধুনিকায়ন করার প্রতিশ্রুতি রয়েছে৷ ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র জাতি সত্তা ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আইন বাতিল করা হবে৷ সার্ক, বিমসটেকসহ আঞ্চলিক সহযোগিতা জোরদার এবং ইসলামিক উম্মাহর সংহতি ও ইসলামি দেশগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা উন্নততর করা হবে৷ সমমর্যাদার ভিত্তিতে জাতীয় স্বার্থ অক্ষুণ্ণ রেখে সকল রাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’-এই নীতির ভিত্তিতে পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করা হবে৷সমগ্র জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই ইশতেহার বাস্তবায়ন করে নতুন প্রজন্মকে সুন্দর ও সফল ভবিষ্যৎ উপহার দেয়ার অঙ্গীকার করেন শেখ হাসিনা

Thursday, June 22, 2017

অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনার লক্ষ্যে দেশে একটি জাতীয় সম্প্রচার কমিশন

মন্ত্রিসভা সুসমন্বিত অনলাইন গণমাধ্যম পরিচালনার লক্ষ্যে দেশে একটি জাতীয় সম্প্রচার কমিশন গঠনের প্রস্তাব সম্বলিত ‘জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতি-২০১৭’ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে।
সোমবার নগরীর জাতীয় সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে রেডিও, টিভি ও সংবাদপত্রসহ মূল ধারার গণমাধ্যমের অনলাইন সংস্করণ পরিচালনার বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা সম্বলিত খসড়ার এই অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, ‘জাতীয় ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রেখে দেশের অনলাইন গণমাধ্যম যাতে সুসংগঠিতভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য এই খসড়া নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। শফিউল আলম বলেন, এই খসড়া নীতিতে দেশের প্রতিটি অনলাইন গণমাধ্যমকে প্রস্তাবিত জাতীয় সম্প্রচার কমিশনের বাধ্যতামূলক নিবন্ধনের পরামর্শ দেয়া হয়েছে।অবশ্য তিনি জানান, যে সব অনলাইন মিডিয়া প্রেস এন্ড পাবিলকেশন্স এ্যাক্টের ১৯৭৩-এর আওতায় ইতোমধ্যে নিবন্ধন পেয়েছে সেগুলোকে জাতীয় সম্প্রচার কমিশনে পুনঃনিবন্ধন করতে হবে না।তিনি আরো বলেন, তবে সংশ্লিষ্ট অনলাইন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানকে তাদের ইতোপূর্বেকার নিবন্ধনের বিষয়ে কমিশনকে অবহিত করতে হবে।শফিউল আলম বলেন, রেডিও, টিভি, সংবাদপত্র ও অনুরূপ প্রতিষ্ঠানের অনলাইন গণমাধ্যমের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য এই খসড়া নীতিতে একটা বিস্তারিত দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এই আইনের সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কমিশনের সঙ্গে পরামর্শ করে সরকার পরবর্তীতে কার্যপ্রণালীবিধি প্রণয়ন করবে। অতপর কমিশন সম্প্রচারকদের লাইসেন্স প্রদানের জন্য দিক-নির্দেশনা তৈরির ক্ষমতা প্রাপ্ত হবে।
এছাড়া এই কমিশন সরকারকে টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট টিভি অথবা অন্যান্য ডিজিটাল সম্প্রচার স্টেশনকে লাইসেন্স প্রদানের জন্য সুপারিশ করবে এবং সরকারের অনুমোদনের জন্য লাইসেন্স ইস্যু করবে।
প্রস্তাবিত খসড়া নীতি অনুযায়ী কমিশন অনলাইন গণমাধ্যমের যে কোন প্রতিবেদনের কারণে সংক্ষুদ্ধ ব্যক্তির তরফে অভিযোগ গ্রহণ করবে।
শফিউল আলম বলেন, সম্প্রচারকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয় সম্প্রচার নীতি-২০১৪ লংঘন করে কোন কিছু প্রচার করলে কমিশন তাকে কারণ দর্শনোর নোটিশ প্রদান। তদন্ত শুরু করা ও তার বিরুদ্ধে আরো ব্যবস্থা গ্রহণে সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারে।
তিনি বলেন, কমিশনের নিকট যদি প্রতীয়মান হয় যে কোন অনলাইন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠান আচরণবিধি লংঘন ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছে তবে কমিশন নিজেই ওই অনলাইন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
নিরাপত্তা আঞ্চলিক সংহতি, শান্তি, জন শৃঙ্খলা ও দেশের ঐক্যের জন্য হুমকি সৃষ্টিকারী কোন কিছু অনলাইনে সম্প্রচার হলে কমিশন উক্ত অনলাইন সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণেও সক্ষম হবেন।
এছাড়া কমিশন কুরুচিপূর্ণ, মিথ্যা ও বিদ্বেষপূর্ণ খবর এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী ও জাতীয় ইতিহাস-ঐতিহ্যের বিকৃতিমূলক কোন কিছু সম্প্রচারের জন্য সংশ্লিষ্ট সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

No comments:

Post a Comment